আমরা যারা পঞ্চাশের কোটা পার করেছি, জীবনে এগিয়ে চলার সাথে সাথে আমরা একটা
খেলাঘরের বৃত্ত তৈরি করেছি । সেখানে একটা সিঁড়িও আছে । সেই সিঁড়ি দিয়ে নেমে
মাঝে মাঝেই ছোটবেলায় পৌঁছে যাই । যেমন আজকের সকালে। আমাদের পৃথিবীতে এখন
আতংকঋতু যাপন চলছে । কতদিন চলবে কেউ জানে না । সকলে ছাদে উঠে দেখি, দূরে
রেল লাইনের ধারের কৃষ্ণচূড়ার লাল মাথাগুলো দেখা যাচ্ছে, হালকা হাওয়ায় নীল
আকাশে হেলান দিয়ে হাসাহাসি, কিন্তু কারণটা বোঝা যাচ্ছে না । আতংককাল যাপনের
কথা ভুলে পথে বেরিয়েই পড়লাম । মুখে মুখোশ পরে, হাতে ক্যামেরা
নিয়ে, কৃষ্ণচূড়ার পাড়ার দিকেই পা বাড়ালাম । পথে পড়ল রেলের লাইনের ধারে এক
মস্ত ঝিল । তার ধারে ধারে নানা বনফুলের ঝোপ । আজ আড়াই মাস পরে নতুন করে
দেখা । জিজ্ঞাসা করে, “কেমন আছো ? কতদিন দেখিনা।পথ বদলালে না কি?” কিবা আর
উত্তর দি, হাসিটুকু ছাড়া । হঠাৎ দেখি, জলের নড়াচড়া । ওমা , এক তেচোখো মাছ
। ঐ তো, ওর পেছনে আরও একটা । লেজ নাড়া থামিয়ে আমার দিকেই তাকিয়ে আছে ।
কতদিন পর তেচোখো মাছ দেখলাম । এক দৌড়ে সেই সিঁড়িটা দিয়ে নেমে আসি ছোটবেলায় ।
স্কুল যাওয়ার পথে ওদের সাথে দেখা হয়নি, এমন দিন মনেই পড়ে না । তখন ওরা
গ্রামের সব পুকুর, ঝিলেই যৌথ পরিবারে বাস করত । দল বেঁধে, ঝাঁকে ঝাঁকে ঘুরে
বেড়াত । ওদের চারপাশে চারপেয়ে জল মাকড়সারা জলের ওপর স্কি করে বেড়াত ।
আরে, ওটা কি ? একটা জল শামুক, কেমন জলের দোলায় ভেসে আসছে । কি সুন্দর যে একটা জলছবি তৈরি হয়েছে ! কাছাকাছি হতেই তেচোখো ওকে সরে গিয়ে পথ করে দিল । ওরাও শামুকটাকে দেখছিল । শামুকটা ভাসতে ভাসতে এক কচুরিপানায় আটকে গেল । কচুরিপানায় আড়াল হওয়ায় তেচোখো আর শামুকটাকে দেখতে পাচ্ছিল না । ওমা, কি বুদ্ধি দেখ ! এগিয়ে এসে পাতার পাশ থেকে উঁকি মেরে দেখছে । শামুকটাকে ভাল করে দেখতে গিয়ে দেখি, আগে থেকেই আরও একটা শামুক পাতার তলায় আটকে আছে । এই বার বুঝেছি, আটকে থাকা শামুকটা হাওয়ায় হাওয়ায় খবর পাঠিয়েছিল, তাই দ্বিতীয়টি জলে জলে ভেসে এল । শামুকদুটিকে একসাথে দেখে, তেচোখো দুজন গল্প করতে করতে কোথায় যেন চলে গেল । আমার আর কৃষ্ণচূড়ার কাছে যাওয়া হল না ।
আরে, ওটা কি ? একটা জল শামুক, কেমন জলের দোলায় ভেসে আসছে । কি সুন্দর যে একটা জলছবি তৈরি হয়েছে ! কাছাকাছি হতেই তেচোখো ওকে সরে গিয়ে পথ করে দিল । ওরাও শামুকটাকে দেখছিল । শামুকটা ভাসতে ভাসতে এক কচুরিপানায় আটকে গেল । কচুরিপানায় আড়াল হওয়ায় তেচোখো আর শামুকটাকে দেখতে পাচ্ছিল না । ওমা, কি বুদ্ধি দেখ ! এগিয়ে এসে পাতার পাশ থেকে উঁকি মেরে দেখছে । শামুকটাকে ভাল করে দেখতে গিয়ে দেখি, আগে থেকেই আরও একটা শামুক পাতার তলায় আটকে আছে । এই বার বুঝেছি, আটকে থাকা শামুকটা হাওয়ায় হাওয়ায় খবর পাঠিয়েছিল, তাই দ্বিতীয়টি জলে জলে ভেসে এল । শামুকদুটিকে একসাথে দেখে, তেচোখো দুজন গল্প করতে করতে কোথায় যেন চলে গেল । আমার আর কৃষ্ণচূড়ার কাছে যাওয়া হল না ।
শুদ্ধ সহজ অনুভূতি
উত্তরমুছুন