বৃহস্পতিবার, ৯ জুলাই, ২০২০

দুয়ার খোলার সকাল !




আমরা যারা পঞ্চাশের কোটা পার করেছি, জীবনে এগিয়ে চলার সাথে সাথে আমরা একটা খেলাঘরের বৃত্ত তৈরি করেছি । সেখানে একটা সিঁড়িও আছে । সেই সিঁড়ি দিয়ে নেমে মাঝে মাঝেই ছোটবেলায় পৌঁছে যাই । যেমন আজকের সকালে। আমাদের পৃথিবীতে এখন আতংকঋতু যাপন চলছে । কতদিন চলবে কেউ জানে না । সকলে ছাদে উঠে দেখি, দূরে রেল লাইনের ধারের কৃষ্ণচূড়ার লাল মাথাগুলো দেখা যাচ্ছে, হালকা হাওয়ায় নীল আকাশে হেলান দিয়ে হাসাহাসি, কিন্তু কারণটা বোঝা যাচ্ছে না । আতংককাল যাপনের কথা ভুলে পথে বেরিয়েই পড়লাম । মুখে মুখোশ পরে, হাতে ক্যামেরা নিয়ে, কৃষ্ণচূড়ার পাড়ার দিকেই পা বাড়ালাম । পথে পড়ল রেলের লাইনের ধারে এক মস্ত ঝিল । তার ধারে ধারে নানা বনফুলের ঝোপ । আজ আড়াই মাস পরে নতুন করে দেখা । জিজ্ঞাসা করে, “কেমন আছো ? কতদিন দেখিনা।পথ বদলালে না কি?” কিবা আর উত্তর দি, হাসিটুকু ছাড়া । হঠাৎ দেখি, জলের নড়াচড়া । ওমা , এক তেচোখো মাছ । ঐ তো, ওর পেছনে আরও একটা । লেজ নাড়া থামিয়ে আমার দিকেই তাকিয়ে আছে । কতদিন পর তেচোখো মাছ দেখলাম । এক দৌড়ে সেই সিঁড়িটা দিয়ে নেমে আসি ছোটবেলায় । স্কুল যাওয়ার পথে ওদের সাথে দেখা হয়নি, এমন দিন মনেই পড়ে না । তখন ওরা গ্রামের সব পুকুর, ঝিলেই যৌথ পরিবারে বাস করত । দল বেঁধে, ঝাঁকে ঝাঁকে ঘুরে বেড়াত । ওদের চারপাশে চারপেয়ে জল মাকড়সারা জলের ওপর স্কি করে বেড়াত ।
আরে, ওটা কি ? একটা জল শামুক, কেমন জলের দোলায় ভেসে আসছে । কি সুন্দর যে একটা জলছবি তৈরি হয়েছে ! কাছাকাছি হতেই তেচোখো ওকে সরে গিয়ে পথ করে দিল । ওরাও শামুকটাকে দেখছিল । শামুকটা ভাসতে ভাসতে এক কচুরিপানায় আটকে গেল । কচুরিপানায় আড়াল হওয়ায় তেচোখো আর শামুকটাকে দেখতে পাচ্ছিল না । ওমা, কি বুদ্ধি দেখ ! এগিয়ে এসে পাতার পাশ থেকে উঁকি মেরে দেখছে । শামুকটাকে ভাল করে দেখতে গিয়ে দেখি, আগে থেকেই আরও একটা শামুক পাতার তলায় আটকে আছে । এই বার বুঝেছি, আটকে থাকা শামুকটা হাওয়ায় হাওয়ায় খবর পাঠিয়েছিল, তাই দ্বিতীয়টি জলে জলে ভেসে এল । শামুকদুটিকে একসাথে দেখে, তেচোখো দুজন গল্প করতে করতে কোথায় যেন চলে গেল । আমার আর কৃষ্ণচূড়ার কাছে যাওয়া হল না ।

1 টি মন্তব্য:

কবিতা ৮ ।

 সপ্তসিন্ধু পার করে লখিন্দর ফেরে ঘরে।সাথে করে  বিবিধ রতন। শঙ্খ বাজে, উলু দেয় এয়োতি, পুরজন। বাপ তার, চন্দ্র সওদাগর। লখার সাফল্যে মুখে তার  গো...