বুধবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

কবিতা ৮ ।

 সপ্তসিন্ধু পার করে লখিন্দর ফেরে ঘরে।সাথে করে 

বিবিধ রতন। শঙ্খ বাজে, উলু দেয় এয়োতি, পুরজন।

বাপ তার, চন্দ্র সওদাগর। লখার সাফল্যে মুখে তার 

গোধূলির আভা। মা এসে বুকে নেয় তাকে।

ওই, কার চোখ দুটি ছলছল, বর্ষায়, ভরা গাঙ্গুরের মতো। 

ঘোমটার আবডালে কপালের টিপখানি আধখানা ঢাকা। 

ভালোবাসা ঘিরে ধরে সন্ধ্যার জোনাকির মতো। 

ঘাট খালি হয়, পারানী গায় ঘরে ফেরার গান। 

সিঁথিপটে অস্তরবির রেখাটুকু এঁকে, 

অপেক্ষায় দুঃখিনী সধবা। 

বেহুলা রাত জাগে আজও, বুকভরা মরুভূমি নিয়ে। 

প্রানপনে শ্বাস ভরে নেয় সে সুখের বুদ্বুদে। 

তার যে মরে যাওয়া মানা।

কবিতা ৭ ।

 বিশ্বাসের ছলনায় নীল হয়ে গেছে অপরাজিতা। 

ষড়যন্ত্রের পঞ্চ ইন্দ্রিয়, ছুঁয়ে যায় নিষ্পাপ মন। 

গলে গলে পড়ে চোখের জল, মোমের মতন। 

যন্ত্রনা তরল হলে বন্যা হতে পারে, 

সাঁতারে নেমো না যেন, যেতে পারো ডুবে। 

বাঁচাবার কেউ নেই। মধু গোধূলিতে সবাই মত্ত, 

বিশ্বাসের কাটাকুটি খেলায়। 

নিমজ্জিত তুমি এক, আর আছে তোমার নিয়তি।

আলোক পথে

এগিয়ে চলেছি উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে। যদিও এখনও আভাসও পাইনি তার। উজ্জ্বল ভবিষ্যতের স্বপ্ন, এখনও হামাগুড়ি কাটে, মস্তিষ্কের খোপে। আয়ু ফুরোতে ফুরোতে পরমায়ুকে প্রায় ছুঁয়ে ফেলা দূরত্বের কাছাকাছি। না, এখনও দৃষ্টির বাইরে সেই ভবিষ্যতের আলোর রূপরেখা। বিলকুল অজানা সেই পথ, হায়েনারা নখে শান দেয়, হাসিমুখে। তারারা আলো দেখায়। কুয়াশারা আলোর নিশানা ঢাকে, আঁধারের প্ররোচনায়। মন বলে, আলো চাই, আরও আলো। ধৈর্য্যের বাঁধ ভাঙে।  দৃষ্টি আজ শক্তি হারিয়েছে। বোধের বোধন কাল উপস্থিত। মনের ভিতর সন্দেহশিশুদের আর্তনাদ। জীবন প্রশ্ন করে, 'পারবে তো?' হেসে ওঠে প্রাচীন পা দুটো। চলতে চলতে উত্তর দেয়, 'হে বৃদ্ধ জীবন, তোমার চোখেও কি ভীমরতির আলো, এখনো তোমার সংশয় কাটে নি? আমি যে সেই পলাতকা,  যাকে  ধরতে পারো নি তুমি, কোনোদিন।' 'দিশাহীন নই আমি, তাই আমি একা।' বেড়ে যায় বাতাসের বেগ, উড়ে যাই দিগন্তের পানে। মনে দৃঢ় বিশ্বাস, অকর্মণ্য বর্তমান, কখনও উজ্জ্বল ভবিষ্যতের ঠিকানা বলতে পারে না। মিথ্যার ছাঁদখানি ভেঙে যায়, সত্যের কঠিন আঘাতে। স্পষ্ট করে শিখে গেছি, যেখানে লেলিহান শিখা নেই, নেই নিঃশেষে পোড়ার যন্ত্রনা, সেখানে আলোর উপস্থিতির ভাবনা, মরীচিকার উপাখ্যান। সারসত্যটুকু জেনে গেছি, জীবনের চির অন্ধকার পথটুকু পেরিয়ে যেতে হয়, নিজের অন্তরের দীপটিকে জ্বালিয়ে রেখে, বড়ো সাবধানে। অবশেষে সেই অনির্বান শিখাটিই পথ দেখায়, উজ্জ্বল ভবিষ্যতের।

কবিতা ৮ ।

 সপ্তসিন্ধু পার করে লখিন্দর ফেরে ঘরে।সাথে করে  বিবিধ রতন। শঙ্খ বাজে, উলু দেয় এয়োতি, পুরজন। বাপ তার, চন্দ্র সওদাগর। লখার সাফল্যে মুখে তার  গো...